মাত্র এক হাজার টাকায় এক যৌনকর্মীর সঙ্গে সময় কাটানোর জন্য চুক্তি করেন গ্যারেজ এক কর্মী। যুক্তি অনুযায়ী বিকেলে ঘোরাঘুরি করেন তারা। এরপর বাসায় গিয়ে করেন শারীরিক সম্পর্ক। গ্যারেজ কর্মী একবার যৌনকর্মে তৃপ্ত না হওয়ায় সারারাত তাকে রাখতে চান। এতেই বিতণ্ডার একপর্যায়ে হত্যার পর বিভৎস কাণ্ড করেন গ্যারেজ কর্মী। এ ঘটনায় প্রধান অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। অভিযুক্তের নাম আব্দুল জব্বার (২৫)। বুধবার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন ডিবি গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মশিউর রহমান। তিনি বলেন, গত ১০ অক্টোবর বিকেলে ভাটারা থানার ছোলমাইদ ঢালীবাড়ি এলাকায় এক নারীর মরদেহ পাওয়া যায়। তাৎক্ষণিক মরদেহের পরিচয় শনাক্ত হয়নি। তবে প্রযুক্তির সহায়তায় তার পরিচয় শনাক্ত হয়। এ ঘটনার পর ডিবি পুলিশ তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ও অপরাধ সংশ্লিষ্ট এলাকার সিসিটিভির ফুটেজ পর্যালোচনা শুরু করে। পরবর্তীতে অপরাধীদের পরিচয় শনাক্ত করা হয়। এরপরই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতার জব্বারকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে ডিবি জানায়, আব্দুল জব্বার গাড়ির গ্যারেজের কর্মী। নিহত নারী একটি গার্মেন্টসে চাকরি করতেন। মাঝে মধ্যে টাকার বিনিময়ে ওই নারী পরিচিতদের সঙ্গে একান্তে সময় কাটাতেন। ৮ অক্টোবর দুপুরে মোবাইলে কথা বলে আব্দুল জব্বারের সঙ্গে সময় কাটানোর জন্য সে বের হয়। তাকে নিয়ে যমুনা ফিউচার পার্ক ও ফুটপাতের ফুচকার দোকানে ঘোরাঘুরি করে গ্যারেজ কর্মী। সন্ধ্যার পরে সে গার্মেন্টস কর্মীকে তার ছোলমাইদ ঢালীবাড়ীর ভাড়া বাসায় নিয়ে যায়। এর আগেই নিজের স্ত্রী-সন্তানকে শ্বশুরবাড়িতে পাঠিয়ে দেয় গ্যারেজ কর্মী।
পরবর্তীতে ওই নারীর সঙ্গে যৌনকর্ম শেষ করলে তিনি টাকা দাবি করেন এবং চলে যেতে চান। কিন্তু গ্যারেজ কর্মী ভিকটিমের রাতভর সময় কাটাতে চেয়েছিল। এটা শুনে ক্ষিপ্ত হন ওই নারী। হুমকি দেন তার ( আব্দুল জব্বারের) সব কর্মকাণ্ড ফাঁস করে দেবেন এবং চিৎকার চেঁচামেচি করেন। আব্দুল জব্বার বলছে, নিজের আত্মসম্মান রক্ষার ভয়ে ওই নারীকে ঘটনার দিন রাত ১০টার দিকে গলাটিপে হত্যা করে। এরপর মরদেহকে পুড়িয়ে মুখমণ্ডল বিভৎস করা হয়।
তিনি আরো বলেন, আব্দুল জব্বার ইয়াবা আসক্ত ছিল। খুনের পর ভিকটিমের মোবাইল এক হাজার টাকায় বিক্রি করে তিনটি ইয়াবা কেনে সে। এ সময় তার বন্ধু হীরাকে বাসায় এনে দুজন ইয়াবা সেবন করে মরদেহটি গুমের পরিকল্পনা করে। এসময় মরদেহটি প্রথমে একটি কার্টনে রেখে ভাঙারির দোকান বড় বস্তা আনে। বস্তায় মরদেহটি ভরে রাত ৩টায় মাথায় নিয়ে তিনতলা থেকে নামায় আব্দুল জব্বার ও হীরা মরদেহ। পরে একশ টাকায় রিকশা ভাড়া করে মরদেহটি রাস্তায় ফেলে দেয় তারা।
গোয়েন্দা পুলিশ বলছে, অভিযুক্তের স্বীকারোক্তিতে চুরি হওয়া মোবাইল, ভিকটিমের ফেলে দেওয়া বোরকা এবং স্যান্ডেলসহ অন্যান্য আলামত উদ্ধার করা হয়। আব্দুল জব্বার আদালতে ঘটনার স্বীকারোক্তি প্রদানও করেছে।