বরিশালে কুয়াকাটা-২ লঞ্চে নিহত শারমিনের হত্যাকারীর পরিচয় পেয়েছে পুলিশ। স্বামী মাসুদই তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে পালিয়েছে বলে অভিযোগ নিহতের স্বজনদের। এ ঘটনার মামলার প্রস্তুতি চলছে।
পুলিশ জানিয়েছে, স্বামী মাসুদ হাওলাদারের সঙ্গে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কুয়াকাটা-২ লঞ্চে ওঠেন শারমিন আক্তার। লঞ্চের নিচতলার একটি স্টাফ কেবিন ভাড়া নেন তারা। শুক্রবার সকালে শারমিন আক্তারের লাশ পাওয়া গেলেও মাসুদ পলাতক রয়েছেন।
মাসুদ হাওলাদারের বাড়ি ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার পশ্চিম গোপালপুরে। তিনি ঐ গ্রামের জলির হাওলাদারের ছেলে। নিহত শারমিন আক্তার বরিশাল নগরীর এয়ারপোর্ট থানার উত্তর রাফিয়াদি গ্রামের এনায়েত হোসেন ও নুরুন্নাহারের মেয়ে।
শারমিনের মামা মকবুল হোসেন জানান, চার বোনের মধ্যে বড় ছিলেন শারমিন। বাবার আর্থিক অনটনের কারণে কয়েক বছর আগে ঢাকায় গার্মেন্টসে চাকরি নেন তিনি। সেখানে পরিচয় হয় নলছিটির বাসিন্দা মাসুদ হাওলাদারের সঙ্গে। একই গার্মেন্টসে কাজ করতে গিয়ে প্রেম করে প্রথমে নোটারির মাধ্যমে দুজনে বিয়ে করেন। কিন্তু শারমিনের জমানো টাকা নেয়ার পর তাকে ছেড়ে যান মাসুদ। চলতি বছর তার বিরুদ্ধে বরিশাল আদালতে ধর্ষণ মামলা হয়। তদন্তে ঘটনার সত্যতা পেলে তার বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয় পুলিশ। তখন মাসুদ পুনরায় শারমিনকে মেনে নেয়।
মকবুল হোসেন বলেন, মাসুদের মনে যে এসব ছিল তা বুঝতে পারিনি। তাহলে আমার ভাগনিকে ওর সঙ্গে দিতাম না। ৬-৭ মাস আগে দুজনে ঢাকা গিয়ে কুনিপাড়ার একই বাসায় ওঠে। এর আগেও দুজনের মধ্যে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ঝামেলা, মারামারি হয়েছে। মাসুদ বিভিন্ন সময়ে যৌতুকও চেয়েছে। তা নিয়েও সালিশ হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, বৃহস্পতিবার আমার ভাগনিকে বাড়িতে নিয়ে আসার কথা বলে লঞ্চের কেবিনে পরিকল্পিতভাবে শ্বাসরোধে হত্যা করেছে সে। কারণ তার বিরুদ্ধে শারমিন ধর্ষণ মামলা করেছিল। সেই মামলার প্রতিশোধ নিতেই শারমিনকে হত্যা করেছে মাসুদ। আমরা এ হত্যার বিচার চাই।
অভিযুক্ত মাসুদ হাওলাদারকে গ্রেফতার করতে পারলে হত্যাকাণ্ডের রহস্য বের হবে বলে জানিয়েছেন বরিশাল সদর নৌ থানার ওসি হাসনাত জামান।