মুন্সিগঞ্জের টঙ্গীবাড়ীতে রাতে স্বামীর সঙ্গে একসঙ্গে ঘুমিয়ে ছিলেন ২০ বছর বয়সী সানজিদা। তবে সকালে মিলেছে তার ঝুলন্ত মরদেহ। রাতে হঠাৎ কী হলো, এমন প্রশ্ন স্বজনদের।
সানজিদা টঙ্গীবাড়ী উপজেলার কাইচাইল গ্রামের মালয়েশিয়া প্রবাসী আবু সাঈদ শেখের মেয়ে। বাবার একমাত্র মেয়ে ছিলেন তিনি। আর মেয়ের এমন মৃত্যু কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না বাবা। তাই বাবার ফেরার অপেক্ষায় ফ্রিজিং গাড়িতে রেখে দেওয়া হয়েছে মেয়ের মরদেহ। বাবা ফিরলে হবে দাফন। একই সঙ্গে খুঁজে দেখা হবে মৃত্যুর কারণ।
স্থানীয়রা জানায়, সোমবার সকালে কাইচাইল গ্রামে স্বামীর ঘরের আড়ার সঙ্গে ওড়না পেঁচানো অবস্থায় সানজিদার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। মাত্র সাত মাস আগে একই গ্রামের শাহজাহান ব্যাপারীর ছেলে সাহারিয়ার রাতুলের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কের মাধ্যমে বিয়ে হয় সানজিদার।
রোববার রাতে এক ঘরেই ঘুমান রাতল ও সানজিদা। সোমবার সকালে সানজিদাকে ঘরের আড়ার সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ঝুলন্ত দেখতে পান রাতুল। পরে তার মা মরদেহ নামিয়ে খাটের ওপর রেখে এলাকাবাসীকে খবর দেন। এরপর এলাকাবাসী খবর দিলে মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
সোমবার বিকেলে মরদেহটি স্বজনদের বুঝিয়ে দেয় পুলিশ। এরপর সন্ধ্যা ৬টার দিকে ঢাকা থেকে ফ্রিজিং গাড়ি আনা হয়। এ সময় সানজিদার মরদেহ বাড়ি থেকে প্রায় ৫০০ গজ দূরে কাইচাইল চৌকিদার পাড়া জামে মসজিদের সামনের রাস্তায় ফ্রিজিং গাড়িতে রেখে পাহারা দেন পরিবারের সদস্যরা।
নিহতের মা সাহিদা বেগম বলেন, আমার মেয়ে ওই ছেলেকে পছন্দ করায় আমি পরিবারের সবাইকে বুঝিয়ে কোরবানির ঈদের এক সপ্তাহ আগে বিয়ে দেই। আমার মেয়ে কীভাবে মারা গেছে আমি কিছু বলতে পারি না। তাই তার বাবা বলেছে মরদেহ রেখে দিতে। আমরা ঢাকা থেকে গাড়ি এনে তার মরদেহ রেখে দিয়েছি। তার বাবা মালয়েশিয়া থেকে আসার পর যা করার করবে।
তিনি আরো বলেন, ১৫ ডিসেম্বর রাত তিনটার দিকে সানজিদার বাবা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করার কথা রয়েছে। তিনি বাড়িতে না ফেরা পর্যন্ত মরদেহ রাখা হবে ওই ফ্রিজিং গাড়িতে।
টঙ্গিবাড়ী থানার ওসি মোল্লা সোয়েব আলী বলেন, খবর পেয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত করা হয়। ময়নাতদন্ত শেষে স্বজনদের কাছে মরদেহ বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে টঙ্গিবাড়ী থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা করা হয়েছে।