ছুটির দিন হওয়ায় আর দশজনের মতো ২৫ বছর বয়সী হৃদয় হোসেনও চায়ের দোকানে এসে বসেন। এর মধ্যেই হঠাৎ ছুটে আসে একটি সাদা মাইক্রোবাস। ফিল্মি স্টাইলে এ মাইক্রোতেই হৃদয়কে তুলে নেয়া হয়। দোকানে থাকা লোকজন কিছু বুঝে ওঠার আগেই তাকে নিয়ে যায় অপহরণকারীরা। এর ঠিক তিনদিন পর মিলল হৃদয়ের ১০ টুকরো লাশ।
সোমবার রাতে পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার দাশুড়িয়া-লালন শাহ সেতুর মহাসড়কের নওদাপাড়া দোতলা মসজিদ সংলগ্ন চাঁদ আলীর বাড়ির মেঝে খুঁড়ে লাশের এসব টুকরো উদ্ধার করে পুলিশ। একই সঙ্গে এ বাড়ির ভাড়াটিয়া হোসেন আলীকে আটক করা হয়েছে।
হৃদয়ের বাড়ি ঈশ্বরদী উপজেলার পাকশী ইউনিয়নের নতুন রূপপুর এলাকায়। বাবার নাম মজনু মোল্লা। তিনি পাবনা অ্যাডওয়ার্ড কলেজের শিক্ষার্থী ছিলেন। তাদের নওদাপাড়া এলাকায় বিকাশের দোকান রয়েছে।
রূপপুর পুলিশ ফাঁড়ির এসআই আতিকুল ইসলাম বলেন, পাবনা জেলা পুলিশের তথ্যপ্রযুক্তি ও মোবাইল ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে জড়িতদের অবস্থান নিশ্চিত হই আমরা। এরপর রাত ৯টার দিকে ঈশ্বরদী উপজেলার নওদাপাড়া গ্রামে চাঁদ আলীর বাড়িতে অপহৃত ছাত্রের লাশের সন্ধান মেলে। এছাড়া হোসেন আলীকে আটক করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হোসেন জানান, তার ঘরের মেঝে খুঁড়ে হৃদয়ের লাশটি পুঁতে রাখা হয়েছে। পরে মাটি খুঁড়ে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহতের স্বজনরা জানান, ১০ ডিসেম্বর সকাল ৯টার দিকে পাকশী ইউনিয়নের রূপপুর তিনবটতলা এলাকা থেকে হৃদয়কে প্রকাশ্যে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায় অপহরণকারীরা। পরে অপহরণকারীরা হৃদয়ের মোবাইল ফোন থেকে কল দিয়ে ৪০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে।
এসআই আতিকুল ইসলাম বলেন, ১০ ডিসেম্বর এ অপহরণের ঘটনার পর থেকে সোমবার দুপুর পর্যন্ত ওই শিক্ষার্থীর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। তবে এরই মধ্যে অপহরণকারী চক্রটির মোবাইল ফোন ট্র্যাকিং ও তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে তাদের অবস্থান নিশ্চিত হয়ে রাতে লাশের সন্ধান পাওয়া গেছে।
ঈশ্বরদী থানার ওসি আসাদুজ্জামান বলেন, হৃদয়কে হত্যার পর ১০ টুকরো করা হয়। এরপর ঘরের মেঝেতে পুঁতে রাখা হয়েছিল। তবে কারা কী কারণে অপহরণ করেছিল তা বলতে পারছি না।