নাটোরে কলেজশিক্ষক খাইরুন নাহারের মৃত্যুর ঘটনায় স্বামী মামুনকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ। সোমবার বিকেল ৬টার দিকে জেলা আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মোসলেম উদ্দীন জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এর আগে গত রোববার সকাল ৭টার দিকে শহরের বলারিপাড়া এলাকার ভাড়া বাসা থেকে খাইরুন নাহারের মরদেহ উদ্ধারের পর মামুনকে আটক করে পুলিশ।
নিহত শিক্ষক মোছা. খাইরুন নাহার গুরুদাসপুর উপজেলার চাঁচকৈড় পৌর এলাকার মো. খয়ের উদ্দিনের মেয়ে এবং উপজেলার খুবজীপুর এম হক ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক ছিলেন। গ্রেফতার মামুন নাটোর এন এস সরকারি কলেজের ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র।
আসামিপক্ষের আইনজীবী গোলাম সারোয়ার স্বপন বলেন, মামুনের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ আনতে পারেনি পুলিশ। এ কারণে তাকে আদালতে পাঠানো হয়। সুতরাং তার জামিন পাওয়ার আমরা হকদার। মঙ্গলবার পুনরায় জামিনের জন্য আবেদন করা হবে।
সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবুল কালাম আজাদ জানান, রোববার সকালে মরদেহ উদ্ধারের পর মামুনকে আটক করা হয়। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সোমবার দুপুরে তাকে আদালতে পাঠানো হয়। নাটোর সদর থানার ওসি নাসিম আহমেদ জানান, খাইরুন নাহারের মৃত্যুর ঘটনায় তার চাচাতো ভাই গুরুদাসপুর উপজেলার খামার নাচকৈড় গ্রামের সাবের উদ্দিন বাদী হয়ে একটি ইউডি (অপমৃত্যু) মামলা করেছেন।
নাটোরের পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বামী মামুন তাদের দাম্পত্য কলহের কথা স্বীকার করেছেন।
তিনি আরো বলেন, মামুনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা গেছে, দুজনের দাম্পত্য জীবন সুখের ছিল না। খাইরুনের কাছ থেকে টাকা নিয়ে মামুন নামমাত্র ব্যবসা করতেন। খাইরুন তার বড় ছেলে বৃন্তকে দুই লাখ টাকা দিয়ে মোটরসাইকেল কিনে দেওয়ার জন্য মামুনের সম্মতি চান। কিন্তু মামুন সম্মতি দেননি। এনিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে মামুন রাগ করে শনিবার রাত ২টার দিকে বাড়ি থেকে বের হয়ে যান। পরে রোববার ভোর ৬টার দিকে বাড়ি ফিরে দেখেন খায়রুন নাহার সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ফাঁস দিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, গুরুদাসপুর উপজেলার খুবজীপুর এম হক ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক মোছা. খাইরুন নাহার। রাজশাহীর বাঘায় তার প্রথম বিয়ে হয়েছিল। পারিবারিক কলহে সংসার বেশি দিন টেকেনি তার। তবে ওই ঘরে একটি সন্তান রয়েছে। পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ২০২১ সালের ২৪ জুন পরিচয় হয় মামুন হোসেনের সঙ্গে। পরে গড়ে ওঠে প্রেমের সম্পর্ক। একপর্যায়ে ২০২১ সালের ১২ ডিসেম্বরে গোপনে দুইজন বিয়ে করেন।