Home / সারাদেশ / কোন হোটেলে কতদিন ছিলেন ধর্ষণের শিকার পর্যটক

কোন হোটেলে কতদিন ছিলেন ধর্ষণের শিকার পর্যটক

কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকতে নারী পর্যটক গত তিনমাস ধরে স্বামী-সন্তানসহ কক্সবাজারের ৭টি হোটেল-রিসোর্ট ও কটেজে অবস্থান করেছেন। মাঝে ঢকায় ফিরে গেলেও অল্পদিনেই আবার কক্সবাজারে আসেন। প্রতিবার আলাদা হোটেল-রিসোর্টে ওঠেন। এক স্থানে কয়েকদিন অবস্থানের পর আরেক হোটেলে যান তারা।

এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান।

তিনি জানান, প্রাথমিক অনুসন্ধান, ভুক্তভোগী নারী ও মামলার বাদীকে আলাদাভাবে জিজ্ঞাসাবাদে এসব তথ্য জানা গেছে। আরো কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য অধিকতর তদন্তের স্বার্থে এই মুহূর্তে প্রকাশ করা যাচ্ছে না।

র‍্যাব, পুলিশ ও হোটেল-মোটেল মালিকদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, স্বামী-সন্তান নিয়ে ঐ নারী লাইট হাউজ পাড়ার আরমান কটেজে অবস্থান করেন ২-১৫ নভেম্বর পর্যন্ত। পরে ঢাকায় গিয়ে পাঁচদিন পর ফিরে এসে আবার আরমান কটেজে উঠেন। সেখানে থাকেন ৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত।

আরমান কটেজের ম্যানেজার মো. হাসান বলেন, কিশোরগঞ্জ সদরের পরিচয় দিয়ে ঐ নারী ও তার স্বামী দৈনিক এক হাজার টাকা ভাড়ায় আমাদের কটেজে অনেকদিন ছিলেন। বেশিরভাগ সময় বাচ্চা নিয়ে হোটেলে থাকতেন তার স্বামী। তিনি বাইরে যেতেন, তবে কোথায় যেতেন-কি করতেন আমরা জানি না।

৬ ডিসেম্বর ঐ দম্পতি আরমান কটেজের বিপরীতে আরেকটি কটেজে ওঠেন। পরদিন তাদের সেখান থেকে বের করে দেয় কর্তৃপক্ষ। কটেজ মালিক আলী আকবর বলেন, ঐ রাতে হোটেলের সামনে আশিকের সঙ্গে ঐ নারীর স্বামীর কথা কাটাকাটি হয়। বিষয়টি আমার নজরে এলে আমি কী সমস্যা জানতে চাই। কিন্তু তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। এ কারণে আমি তাদের বের করে দেই।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সেখান থেকে বের হয়ে তারা আরেকটু দূরের একটি কটেজে ওঠেন। সেখানেই ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত অবস্থান করেন। ২২ ডিসেম্বর বিকেল ৩টার দিকে ঐ দম্পতি হলিডে মোড়ের সি-ল্যান্ড হোটেলে ওঠেন। ঐদিন সন্ধ্যা ৬টার দিকে ঐ নারীকে হোটেল সি-ক্রাউনের সামনে থেকে সিএনজি অটোরিকশায় তুলে হোটেল-মোটেল জোনের ছেনুয়ারার ঝুপড়ি চা-দোকানে নিয়ে যায় সন্ত্রাসী আশিক।

এ প্রসঙ্গে ঝুপড়ি চা-দোকানের মালিক ছেনুয়ারা বেগম বলেন, আশিক এক নারীকে নিয়ে ২২ ডিসেম্বর রাত ৮টার দিকে আমার এখানে আসে। এরপর ঐ নারীকে দিয়ে তার স্বামীকে ফোন করায়। ফোনে ঐ নারী তার স্বামীকে বলেন- ‘তুমি নাকি আশিক ভাইয়ের সঙ্গে বেয়াদবি করেছো। তুমি এখানে আসো, আমি আছি। আশিক ভাই তোমাকে কিছু করবে না।’ পরে ঐ নারীর স্বামী একটি বাচ্চা নিয়ে আমার দোকানে আসেন। কিছুক্ষণ পর আশিক মোটরসাইকেলে ঐ নারীকে নিয়ে চলে যায়।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার সকালে ঢাকা থেকে স্বামী ও আট মাসের সন্তানকে নিয়ে ঐ নারী কক্সবাজারে বেড়াতে যান। বিকেলে তিনি সমুদ্র সৈকতের লাবণী পয়েন্টে ঘুরতে যান। বালুচর দিয়ে হেঁটে পানির দিকে নামার সময় এক যুবকের সঙ্গে তার স্বামীর ধাক্কা লাগে। এ নিয়ে কথা-কাটাকাটির জেরে সন্ধ্যায় ঐ নারীকে সিএনজিতে করে তুলে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। এরপর একটি ঝুপড়ি চায়ের দোকানে নিয়ে তিনজন মিলে ধর্ষণ করে। পরে একটি রিসোর্টে নিয়ে তাকে আটকে রাখা হয়।

আরো জানা গেছে, হোটেলের ভেতরেই মাদক সেবনের পর ধর্ষকরা তাকে আবারো ধর্ষণ করে। পরে বাইরে থেকে দরজা বন্ধ করে চলে যায়। এসব ঘটনা কাউকে জানালে তার স্বামী-সন্তানকে হত্যা করা হবে বলেও ভয়ভীতিও দেখায় তারা। পরে ওই নারী এক ব্যক্তির সহায়তায় দরজা খুলে বের হন এবং ৯৯৯-এ কল দেন। সেখান থেকে বলা হয় থানায় গিয়ে জিডি করার জন্য। এরপর হোটেল রুমের বাইরে একটি সাইনবোর্ড থেকে নম্বর নিয়ে কল দেন র‍্যাব-১৫-তে। পরে র‍্যাব ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাকে উদ্ধার করে।

Check Also

একসঙ্গে ৬ সন্তানের জন্ম দিলেন তাসলিমা

চট্টগ্রামের নাজিরহাটে একসঙ্গে ছয় সন্তানের জন্ম দিয়েছেন এক মা। সন্তানদের মধ্যে চারজন ছেলে ও দুইজন …