কনসিভ করেছেন? শরীর পাল্টাতে শুরু করেছে। ওজন বাড়ে। ব্রেস্টের মাপে ও গঠনে আসে পরিবর্তন। ব্রেস্ট ফিডিংয়ের প্রস্তুতি হিসেবে ভারী হয়ে যায়, টনটন করে। পরিবর্তন আসে শরীরের অন্যান্য প্রত্যঙ্গেও। এইসব ধকল সামাল দিতে শরীরের দাবিও বেড়ে যায়। সে অনেক যত্ন দাবি করে৷ ভালো খাবার, ভালো ঘুম, বিশ্রাম, ব্যায়াম, হাবিজাবি ওষুধ না খাওয়া, মন শান্ত রাখা ইত্যাদি যার মধ্যে অন্যতম।
প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। তিনি যেভাবে চলতে বলেন, চলুন। সমস্যা কম থাকবে। তিনি বললে ওষুধও খেতে পারেন। ওজন বাড়বে কারণ পুষ্টিকর খাবার পেটভরে খাচ্ছেন, আগে হয়তো যা করতেন না। হরমোনের পরিমান বাড়ছে-কমছে, ওজন বাড়ছে তার হাত ধরেও। তার ওপর আছে বাড়ন্ত ভ্রূণ ও তার আনুসঙ্গিক ওজন।
কাজেই এ সময় বাড়তি ওজন নিয়ে ভাবলে মানসিক চাপ বাড়া ছাড়া আর কোনো কাজের কাজ হবে না। আর এখন মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তা বাড়া মানে ভাবী মা ও ভ্রূণের বিপদ। কাজেই আপাতত ফিগারের কথা ভুলে ঠিকঠাক খাবার খান। প্রসবের পর যখন ব্রেস্টফিড করাবেন ও হালকা ব্যায়াম শুরু করবেন, ওজন নিজে থেকে কমে যাবে।
তবে হ্যাঁ, ভালো-মন্দ খেতে হবে বলে যেন লাগাম ছেড়ে খাবেন না। তাহলে কিন্তু ওজন বিপদসীমার ওপরে চলে যেতে পারে৷ তার হাত ধরে বাড়তে পারে প্রেশার, সুগার৷ গর্ভাবস্থায় যা খুবই বিপজ্জনক৷
কাজেই মনে রাখবেন, এ সময় খাবারের পরিমাণ খুব বেশি না বাড়ালেও চলে, বাড়াতে হয় খাবারের গুণমান৷
>>ওষুধ খাওয়ার মতো পরিস্থিতি হয় অহরহ। কখনো গায়ে-হাত-পায়ে ব্যথা তো কখনো অম্বল, কখনো গ্যাস-বদহজম তো কখনো মাথাব্যথা, কখনো নির্ঘুম রাত তো কখনো বমি। কিন্তু সমস্যা হল, এ সময় নিজে থেকে কোনো ওষুধ খাওয়াই ঠিক নয়, তা সে যাই হোক না কেন, বিশেষ করে প্রথম কয়েক মাস। সুতরাং যেকোনো সমস্যায় ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করুন। তিনি বললে ওষুধ খান। না বললে জীবনযাপনের ধরন বদলে সমস্যাগুলো বশে রাখার চেষ্টা করুন।
>>বিশ্রাম নিতে হবে। কিন্তু তার মানে এই নয় যে সব সময় শুয়ে-বসে থাকবেন। এ সময় বেশি ঘোরাঘুরি ও ভারি কাজ করা নিষেধ করা হলেও হালকা হাঁটাহাটি, ঘরের কাজ, স্টে্রচিং এক্সারসাইজ, হালকা যোগা অবশ্যই করা উচিত। তাতে শরীর-মন দুই-ই ভালো থাকে।
>> ধূমপান, মদ্যপান ও অতিরিক্ত ক্যাফেইন ভাবী মা ও সন্তান দুইয়ের জন্যই ক্ষতিকর। ক্ষতিকর প্রসেস করা ও চিনি-মেশানো খাবার, কথায় কথায় বাইরের খাবার খাওয়া, জাঙ্ক ফুড খাওয়া। কাজেই এসব দিকে কড়া নজর রাখবেন।
>> ভাত খেতে পারছেন না বলে সিঙারা খেয়ে নিলেন, ঘুম আসছে না বলে বসে বসে আইসক্রীম বা চকলেট খেলেন, এসব চলবে না। চিকিৎসক ও পুষ্টিবিদ যা যা খেতে বলেছেন, তার বাইরে অন্য কিছু খাওয়ার আগে দুইবার ভাববেন। ঘুম না এলে শুয়ে বিশ্রাম নেবেন। কারণ এখন শরীরে যে ভাঙচূড় চলেছে তা সামলাতে গেলে বিশ্রামই হল সর্বশ্রেষ্ঠ হাতিয়ার, সে কথা ভুললে চলবে না।